বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২২ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রে দিনে এক লাখ করোনা রোগী ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে

যুক্তরাষ্ট্রে দিনে এক লাখ করোনা রোগী ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে

স্বদেশ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে এক লাখ করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। গত সাত দিনে ভর্তি হওয়া রোগীদের গড় নিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে অনলাইন নিউ ইয়র্ক টাইমস। গত শীত বাদে, অন্য সময়ের তুলনায় এই গড় অনেক বেশি। মার্চের পর এই সংখ্যা সর্বোচ্চ। আবার এই পরিমাণ রোগীর চাপ বাড়ায় হাসপাতালগুলোতে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর চাপ বাড়ছে। বৃদ্ধি পেয়েছে মৃতের সংখ্যা। গত দু’মাসে দেশজুড়ে হাসপাতালে ভর্তি বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা প্রায় ৫০০ ভাগ।

বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। সেখানে আইসিইউ বেড রোগীতে পূর্ণ। অনেক কাউন্টিতে টিকাদান কেন্দ্র অনেক কম। এ ছাড়া টিকা নেয়া বা মুখে মাস্ক পরার রাজনৈতিক ব্যাপক বিরোধিতা আছে সেখানে। ফলে ওই অঞ্চলে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ডাটা অনুসারে, শুধু ফ্লোরিডায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬,৪৫৭ জন রোগী। হাসপাতালে রোগী বৃদ্ধি, নার্সের সঙ্কট পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে। রোগীদের দীর্ঘ সময় জরুরি বিভাগের ওয়েটিং রুমে রাখতে হচ্ছে। এ মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৫টি আইসিইউয়ের মধ্যে একটিতে শতকরা ৯৫ ভাগ রোগীতে ভরা। আলাবামা রাজ্যে সবার আগে আইসিইউয়ের বেড পূর্ণ হয়ে যায়। করোনা সংক্রমণ এবং হাসপাতালে ভর্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল গার্ডের সাহায্যের জন্য আহ্বান জানিয়েছে নক্সভিলের ইউনিভার্সিটি অব টিনেসি মেডিকেল সেন্টার। নক্সভিলের পালমোনারি বিশেষজ্ঞ ড. শ্যানন বির্ড বলেছেন, এমন পরিস্থিতি আমি এর আগে কখনো দেখিনি। তিনি বর্ণনা করেছেন, স্থানীয় হাসপাতালগুলো রোগীতে ভর্তি। আরও জানিয়েছেন, আইসিইউতে যেসব রোগী ভর্তি হয়েছেন ওই অঞ্চলে তার মধ্যে বেশির ভাগই টিকা নেননি। এর ফলে পুরো পরিবার ভুগছে এবং শেষটা হচ্ছে কখনো কান্নায়। অনেক মানুষ মারা যাচ্ছেন। অনেক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করতে হচ্ছে জীবিতদের।
আগের সংক্রমণগুলোর মতো, হাসপাতালগুলো রোগীদের দেখভালের জন্য তার সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। হাসপাতালের বাইরে তাঁবু টানিয়ে সেখানে আইসিইউ স্থাপন করেছে। এমনকি হল ঘর, অতিরিক্ত কক্ষগুলোতে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় মারাত্মক অসুস্থ ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেয়া কঠিন অথবা অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, সেখানে হাসপাতালগুলোর শতকরা ৯৫ ভাগেরও বেশি স্থান এরই মধ্যে রোগীতে ভর্তি।
অরিগন রাজ্যেও মারাত্মক আকারে করোনা সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এর ফলে সেখানে বাড়ছে মৃত্যু। লাশ রাখার স্থান সংকুলান হচ্ছে না মর্গে। তাই মোবাইল মর্গ বা ফ্রিজার ট্রাক পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে কর্তৃপক্ষের কাছে। উপকূলীয় মিসিসিপির সিঙ্গিং রিভার হেলথ সেন্টারের পালমোনারি ক্রিটিক্যাল কেয়ারের পরিচালক ড. ইজলাল বাবর। তিনি বলেন, যেসব রোগীর ঢল নামছে তাদের বেশির ভাগই টিকা নেননি। এসব রোগীর মধ্যে বিপুল সংখ্যক যুবশ্রেণির। তাদের কারণে হাসপাতালের অন্যান্য সেবা ব্যাহত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এত বিপুল এই রোগীর কারণে ভেন্টিলেটর, বেড দখল হয়ে যাচ্ছে। পক্ষান্তরে আরো বিপুল সংখ্যক অন্য রোগী, তাদেরও চিকিৎসা প্রয়োজন। তাদেরকে আমরা উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে পারছি না। কারণ, আমাদের কাছে পর্যাপ্ত আইসিইউ বেড নেই। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত নাস বা ভেন্টিলেটর নেই।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877